রোহিঙ্গা শিবিরে ৫৬ মাসে ৯১ ধর্ষণ মামলা

ডেইলি বাংলাদেশ •

কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবিরে গত চার বছর ৮ মাসে ২ শতাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে মামলা হয়েছে মাত্র ৯১ টি। শতাধিক ধর্ষণের অভিযোগ রোহিঙ্গা নেতারা স্থানীয়ভাবে নিষ্পত্তি করেছেন।

এ বিষয়ে কুতুপালং একটি ক্যাম্পের হেড মাঝি আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘন বসতিপূর্ণ ঝুপড়ি ঘরে অনেক লোককে একসঙ্গে থাকতে হয়। বেকার নারী পুরুষ এক জায়গায় থাকতে গেলে নানা রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। অপরাধের ধরণ দেখে আমরা নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করি। নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য চাই।

কুতুপালং ২ নং ক্যাম্পের হেড মাঝি সিরাজুল মোস্তফা বলেন, কম বয়সী নারীদের নানা প্রলোভনে ফেলে বখাটেরা ধর্ষণ করে। শুধু তাই নয়, বিয়ের প্রলোভনে অনেক রোহিঙ্গা যুবক যুবতীদের টার্গেট করে দলবেঁধে ধর্ষণ করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত গত ৫৬ মাসে ৯১টি ধর্ষণ মামলায় ২২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। টেকনাফ থানায় মামলা হয়েছে ৩২টি, উখিয়া থানায় ৪৩টি, রামু থানায় ৭টি ও কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ৯টি মামলা।

টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক ধর্ষণের অভিযোগ অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। তবে ইয়াবা, সন্ত্রাস মানব পাচার, ছিনতাই ও ডাকাতি বাড়ছে দিন দিন।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সন্জুর মোর্শেদ বলেন, ১৩ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ রোহিঙ্গা উখিয়া উপজেলায় বসবাস করছেন। অথচ উখিয়া উপজেলায় স্থানীয় লোক সংখ্যা প্রায় ২ লাখ। ফলে রোহিঙ্গারা ধর্ষণসহ বহুবিধ অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, গত এক বছরে সাড়ে সাতশত রোহিঙ্গা নারী পুরুষকে নানা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার হয়েছে ৬৭ জন রোহিঙ্গা।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মনিরুল গিয়াস জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা কম বয়সী মেয়েরা অনেকটা বেপরোয়া যে কারণে শহরের বিভিন্ন হোটেলে অভিযান চালাতে গিয়ে ৮০ শতাংশ শতাংশ যৌনকর্মী হচ্ছে রোহিঙ্গা। আবার কোন কোন সময় তারা যৌন নির্যাতনেরও শিকার হয়ে। এক্ষেত্রে অভিযোগ পেলে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে এবং অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত থাকে।

পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আর্মড পুলিশ বা এপিবিএনের তিনটি ইউনিটের অধীনে সাড়ে ৫০০ পুলিশ কর্মরত রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এ সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে। পাশাপাশি র‍্যাব, গোয়েন্দা পুলিশ, ও বিজিবি কাজ করছে। এছাড়া সেনা বাহিনীও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।